December 22, 2024, 9:50 am
শুভব্রত আমান/
চিত্র পরিবর্তন খুব কমই হয় দেশের অন্যতম একটি নদী পারাপার ঘাট পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে। সারা বছরই খবরের থাকে এ ঘাটটি। কখনো বিকলের খবর, কখোন ফেরি স্বল্পতার খবর, কখোনও জেটির এ সমস্যা ও সমস্যা অনেকসব। যতো যাই করা হোক, যতো ব্যবস্থাই গ্রহন করা হোক চিত্রে বদল খুব কমই দেখা যায়। এই সব সমস্যার চিত্র ভয়াবহ হয়ে দেখা দেয় কোন পার্বণ এলেই বিশেষ করে ঈদ টাইপের কোন বিষয়। দুটি ঈদে এই অবস্থা সবার জানা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন মানুষের বাড়তি চাপের কারনেই মুলত এই সমস্যা তীব্রতা নিয়ে দেখ দেয় এই সময়গুলোতে। ঈদের কয়েকদিন এটা এতো তীব্র থাকে যে ভাষায় তা কথন যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।
ঠিক এবারেও সেই একই চিত্র। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। এই ঘাট দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলো থেকে মানুষ-যানবাহন পারাপার হয়। প্রায় তিন কোটি মানুষের এপাড়-ওপাড় চলে এই ঈদ সময়টিতে। ঘাটের যতো সক্ষমতায় থাক এই বাড়তি মানুষ সাথে যানবাহনের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বা দক্ষতা কোনটিই এ ঘাটের নেই।
বুধবার সকালে পাটুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে, ভোর থেকেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি ঘাট ছাড়িয়ে কয়েক কিলোমিটার অতিক্রম করেছে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি অর্থাৎ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসের লম্বা লাইন বেশি। পাশাপাশি যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকেও ফেরি পারাপার হতে পারছে না। এ ছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো।
মঙ্গলবার থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছিলেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পাটুরিয়া ঘাটে ট্রাকের সারি এতই লম্বা যার কারণে বাস-ট্রাক একসঙ্গেই ফেরি পারাপার করা হচ্ছে। ৫০০-৬০০ ট্রাক গেল দু’দিন ধরে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় আটকে পড়েছে।
ঘাট কতৃপক্ষ এবার ঈদে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ হবে কয়েকগুণ বেশি বলে মনে করছেন। তারা বলছেন বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের ঈদে মানুষজন বেশি পারাপার হতে দেখা যাচ্ছে। কারন বিগত করোনায় যারা প্রায় তিনটি ঈদ মিস করেছেন এবার তারা পরিবারের ফিরছে।
এদিকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ২১টির বেশি ফেরি চলাচল করার কথা রয়েছে। তবে মঙ্গলবার বেলা ১০টা পর্যন্ত এই নৌরুটে ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হয়েছে। বুধবার সকালে এ চিত্রে পরিবর্তন হচ্ছে না।
বিআইডব্লিউটিসি’র ডিজিএম শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান ঈদকে সামনে রেখে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। আরও ৩টি ফেরি বহরে যুক্ত হবে। আশা করা যাচ্ছে, ২১টি ফেরি সচল থাকলে যানবাহন ও মানুষজন নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
এই কর্মকর্তা জানান মানুষের চাপ আরো বাড়বে সামনের কয়েকদিনে। তখন কি করবেন জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন এই অবস্থাতেই পারাপার চলবে। আপাতত কিছুই করার নেই।
Leave a Reply